- 19 February, 2024
- 0 Comment(s)
- 277 view(s)
- APDR
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | সন্দেশখালির ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিতে গণ-কনভেনশন
সন্দেশখালির সামপ্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে এপিডিআর এর ডাকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, কলকাতার ত্রিপুরা হিতসাধনী সভাঘরে এক গণ-কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন। সন্দেশখালির তরুন হাবিব এলাকার পরিস্থিতি বর্ননা করেন। এপিডিআর এর ততথ্যানুসন্ধানী দলের রিপোর্ট পেশ করেন দলের সদস্য সরোজ বসু ও আলতাফ আমেদ। বিশিষ্ট সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, ডা: শর্মিষ্ঠা রায়, আমরা'র তরফে শুভপ্রতিম, পি ডি এস এফের পক্ষে শ্রীধর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সর্বসন্মতভাবে গৃহীত প্রস্তাবে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ গণ-কনভেনশনে এপিডিআর এর পেশ করা প্রস্তাব
সন্দেশখালিতে পুলিশের মদতে শাসক তৃণমূল কংগেস দলের নেতাদের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচারের যে ভয়ঙ্কর রূপ মানুষের সামনে উঠে এসেছে তাতে এই সভা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। জবরদস্তি সাধারণ মানুষের জমি দখল, জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেড়ি বানানো, ১০০ দিনের কাজের টাকা লুঠের অসংখ্য কাহিনি সামনে এসেছে। সবথেকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মহিলারা, বছরের পর বছর ধরে তাদের মিটিং এর নামে রাতে পার্টি অফিসে ডাকা, যৌন নির্যাতন এমনকি গণধর্ষণের মতো ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বারবার পুলিশের কাছে গিয়েও কোন সুরাহা পাননি তাঁরা। পুলিশ অভিযোগ নিতেই রাজি হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা অধিকাংশ অভিযোগকেই সিপিএম ও বিজেপির সাজানো চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আবার তিনজন মূল অভিযুক্তের মধ্যে দুজন শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত শাজাহান শেখ অবশ্য এখনও গ্রেফতারি এড়িয়ে পালিয়ে আছেন। অন্যদিকে বিজেপি দল এই ঘটনাকে নিয়ে ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক খেলায় মেতেছে। কখনো সরস্বতী মূর্তি কোলে নিয়ে মিছিল করছে, কখনো সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে হিন্দু জাগরণ বলে অভিহিত করছে। সন্দেশখালির মুসলমানদের রোহিঙ্গাদের বংশধর বলে কুৎসা করে বা মুসলমান দ্বারা হিন্দু রমণীর অপমান বলে চিহ্নিত করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির লাগাতার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানীও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রেখে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। এই অবস্থায় আমরা মনে করি না রাজ্য পুলিশ বা সিবিআই বা কোন কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি দিয়ে তদন্ত করে সত্য উদঘাটন সম্ভব বা দোষীদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব। এই সভা তাই দাবি জানাচ্ছে, -
১) সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় কমিশন তৈরি করা হোক । সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে এই কমিশনের চেয়ারম্যান করা হোক। কমিশন ঘটনাস্থলে ক্যাম্প করে গোপন জবানবন্দি নিয় সত্য উদঘাটনের উদ্যোগ নিক। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনুক।
২) লুঠ হওয়া জমি মূল মালিককে ফিরিয়ে দিক।
৩) নোনা জল ঢোকানো জমিগুলোকে চিহ্নিত করে জমির মালিকদের ফিরিয়ে দিক।
8) নারী নির্যাতনের সমস্ত অভিযোগকে বিচার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক এবং সমস্ত দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করুক।
এই সভা সন্দেশখালীর মহিলাদের সাড়া জাগানো আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যেখানেই শাসক দলের এই ধরনের অত্যাচার চলছে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সামিল হওয়ার জন্য রাজ্যের মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছে। একই সঙ্গে মানুষের ন্যায় সঙ্গত ক্ষোভকে ব্যবহার করে আরএসএস বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক বিভেদের রাজনীতি ছড়ানোর চক্রান্তকে প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছে।