• 18 June, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 121 view(s)
  • APDR

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : ১৭।৬।২০২৪ : অবিলম্বে অরুন্ধতী রায় ও শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে আনা ইউ এ পি এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে



Association For Protection of Democratic Rights (APDR)
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি
১৮ মদন বড়াল লেন
কলকাতা:৭০০০১২

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

১৪ই জুন খ্যাতনামা লেখিকা ও সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় ও কাশ্মীরের মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক শওকত হোসেনের উপর ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু করার অনুমোদন দিয়েছে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর। ২০১০ সালে দিল্লীতে কাশ্মীর বিষয়ক একটি সভায় 'প্ররোচনামূলক' বক্তব্য রাখার অভিযোগে ঐ বছরই তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। চৌদ্দ বছর পর প্রয়োগ করা হচ্ছে ইউ এ পি এ ।
রাষ্ট্র যাকে 'প্ররোচনামুলক বক্তব্য ' বলে প্রচার করছে কী ছিল সেই বক্তব্য? ২০১০ সালে দিল্লিতে 'স্বাধীনতা - একমাত্র পথ ' শীর্ষক আলোচনা সভায় অরুন্ধতী বলেন যে, কাশ্মীর কখনই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল না। শওকত কী বলেছিলেন জানা যায়নি। তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার অরুন্ধতীদের বলা এই বাস্তব সত্যকে সহ্য করতে পারেনি । মামলা দায়ের হয় সেই ২০১০ সালেই। আরও একবার প্রশ্ন উঠে, ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নং ধারায় মত প্রকাশের যে অধিকার মৌলিক অধিকার হিসাবে দেওয়া আছে তা কি লোক দেখানো? নাহলে সেমিনারে নিজের স্বাধীন চিন্তাভাবনা প্রকাশের জন্য মামলা হবে কেন! বিজেপি তো স্বাধীন মত প্রকাশকে সন্ত্রাস সৃস্টি বলেই দাগিয়ে দিলো।

এখন প্রশ্ন এটাই যে, ১৪ বছর পরে আকষ্মিক কী এমন ঘটল যাতে অরুন্ধতী রায়ের মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখিকা ও সমাজকর্মীকে ইউএপিএ ধারায় অভিযুক্ত করতে হলো। ইউএপিএ আইনের ১৩ নং ধারায় আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তি হবে সাত বছরের জেল এবং জরিমানা।

আসলে, অরুন্ধতীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ দেওয়া বিজেপি সরকারের একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ। তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় বসেই বিজেপি - আরএসএস প্রতিবাদী বুদ্ধিজীবী-শিল্পী- সাহিত্যিকদের বার্তা দিয়ে দিলো। সাবধান, প্রতিবাদ করলে কাউকে ছাড়া হবে না। অরুন্ধতীর মত বিখ্যাত হলেও নয়। মোদি সরকারের আশংকা, সরকারের আগামী কিছু পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজ থেকে জোরালো প্রতিবাদ উঠতে পারে। যেমন, কর্পোরেটের মুনাফার ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য অবুঝমাড় দখল করতে ছত্তিশগড়ে লাগাতার হত্যা, বেসরকারিকরণ, নয়া দন্ড সংহিতা, ইলেকটোরাল বন্ড, নীট পরীক্ষা সহ নানান দূর্নীতি। কাশ্মীর নিয়েও ভারত সরকার কিছু অসাধু পরিকল্পনা করছে বলে আশংকা। সরকারের আশংকা অরুন্ধতী রায় সহ নাগরিক সমাজের এক বড় অংশ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। সম্প্রতি সেই অজিত দোভালকেই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেছে মোদী সরকার। দোভালই হলেন সেই ব্যক্তি যিনি নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধের জন্য রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কাজেই কর্পোরেট স্বার্থে জল জঙ্গল জমি দখল ও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধের দাবীতে, বনাধিকার আইন, পেসা আইন লাগু করার দাবীতে লাগাতার সোচ্চার অরুন্ধতীকে ভারত রাষ্ট্র নিশানা বানাবেই। ভীমা কোঁরাগাও এর মত সাজানো মামলায় বুদ্ধিজীবীদের ফাঁসানোর ধারাবাহিকতা বিজেপি - আরএসএস এর তৃতীয় দফার শাসনেও অক্ষুন্ন থাকবে - এটা স্পষ্ট করে দিল এই ঘটনা।

আমরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করছি, অরুন্ধতী রায় ও সওকত হোসেনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ লাগানোর বিরুদ্ধে এখনও একটি কথাও বলেনি ইন্ডিয়া জোটের প্রধান নেতা রাহুল গান্ধী এবং এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এটা উদ্বেগের।

এরাজ্যের সকল গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের কাছে এপিডিআর এর আবেদন, অরুন্ধতীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ জারিকে হুশিয়ারি হিসাবে নিয়ে তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার হোন।

আমাদের দাবি:

  • অবিলম্বে অরুন্ধতী রায় ও শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে আনা ইউ এ পি এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
  • ২০১০ সালের মূল মামলার এফআইআর বাতিল করতে হবে।
  • ইউ এ পি এ, এনআইএ, এনএসএ সহ সমস্ত দানবীয় আইন বাতিল করতে হবে ।
  • জল জমি জঙ্গল থেকে উচ্ছেদের জন্য ছত্তিশগড়ে লাগাতার হত্যা বন্ধ করতে হবে।
  • ওমর খালিদ সহ সকল রাজনৈতিক বন্দিকে নি:শর্তে মুক্তি দিতে হবে।


রঞ্জিত শূর
সাধারণ সম্পাদক
এপিডিআর।
১৭/০৬/২৪
 


Eternal Vigilance is the Price of Liberty
All Rights Reserved APDR
About us | Contact Us